আলাল হোসাইন, দুপচাঁচিয়া(বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ছাদ বাগান বা ছাদ কৃষি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ও বাতাসে কার্বন-ডাই অক্সাইডের মাত্রা কমাতে এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাসা-বাড়ির ছাদে বাগানের ভূমিকা অপরিসীম। বেশির ভাগ ভবনের ছাদ খালি পড়ে থাকায় এবং ফরমালিনমুক্ত ফলমূল ও শাক-সবজি খেতে অনেকেই সখের বসে ছাদ বাগানকে বেছে নিয়েছেন।
পৌর এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, অনেকের বাড়ির ছাদে বিভিন্ন শাকসবজি, ফলজ, বনজ,ও ঔষধিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়েছেন তারা। ফুলে ও ফলে ছেয়ে গেছে ছাদ। গাছে গাছে ফুটেছে বিভিন্ন রঙের ফুল এবং ধরে আছে বিভিন্ন জাতের ফল।
পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক টিপু বলেন, ছোট বেলা থেকেই আমার বাগান করার শখ ছিল। সেই শখকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে ২০০১ সালে থেকে দুই/একটি করে গাছ সংগ্রহ করে তা এখন প্রায় ৪০০ প্রজাতির ১২০০শ মতো গাছ। ভালো জাত ও বাগানের আদর্শ থাকায় আমি এর মধ্যে উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছি। বিলুপ্ত প্রায়, দুর্লভ প্রজাতির দেশি-বিদেশি ও অতি পরিচিত বিভিন্ন প্রজাতির গাছ নিয়ে তাঁর ছাদ বাগানে সারি সারি করে টবে গাছগুলো সাজিয়ে রেখেছেন। কলম করে এবং বীজ থেকে বিক্রির উদ্দ্যেশে তৈরি করছেন নতুন সব চারা। তার বাগানে যে সমস্ত গাছ পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে। আমের জাত ব্রুনাই কিং, তাইওয়ান রেড, লাড্ডু আম, মিয়াজাকি, পাকিস্তানি চৌসা, অলরাউন্ড, সুইট গ্রীন ম্যাঙ্গো। এছাড়াও বিরল প্রজাতির জাতগুলো হলো- লাল জাম্বুরা, সীডলেস কুল, মিরাকল রাসবেরী, পারসিমন, বাওবাব, ডুয়াফ এ্যাভোকাডো।
বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির গাছগুলো হলোঃ- লুকলুকি, কাউফল, হাড়গোজা, জলজমিনি, রিঠা, অগ্নিশিখা, নাগলিঙ্গম, রক্ত চন্দন, স্বেত চন্দন প্রভৃতি। তিনি শুধু একা নয় বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী ও সকলকে বাড়ির ছাদে বাগান করতে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে দূরদুরান্তর থেকে গাছ দেখতে, কিনতে ও পরামর্শ নিতে আসেন তাঁর কাছে।
পৌর এলাকায় আরেক ছাদ বাগানী সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা সাংবাদিক আলহাজ্ব আজিজুল হক বলেন, কোলাহল পরিবেশ থেকে রক্ষা পেতে শখের বসেই নিজের বাসার ছাদে গড়ে তুলেছি ছাদ বাগান। বাড়ির ছাদে ফল ও সবজির চাষ করে পরিবারের চাহিদা মেটানো যায়।
শিক্ষক ও সমাজসেবক ছাদ বাগানী শামীম উদ্দিন বলেন, বাজারে বেশি ভাগ সবজি ও ফলে ফরমালিন মিশানো থাকে। ফলে আমাদের শরীরের ব্যপক ক্ষতি হয়। কিন্তু আমরা যদি বাড়ির ছাদে বাগান তৈরি করি তাহলে নিজেদের চাহিদা মতো বিষমুক্ত ফল ও সবজি খেতে পারি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাজেদুল আলম বলেন, শহরে কৃষি উপযোগী জায়গা কম থাকায় বাড়ির মালিকদের ছাদে বাগান করার ব্যাপারে আমরা উৎসাহ দিয়ে থাকি। ছাদ বাগান করে শুধু পরিবেশগত দিকই নয়, আর্থিক দিক থেকেও লাভবান হতে পারেন। অনেকেই শখের পাশাপাশি বাণিজ্যিক দিক মাথায় রেখে ছাদে বাগান করলেও সফলতা পাবেন।